ফি আমানিল্লাহ অর্থ কি
ফি আমানিল্লাহ অর্থ কি: ফি আমানিল্লাহ অর্থ হলো আল্লাহর নিরাপত্তায় আপনাকে দিয়ে দিলাম, আল্লাহর নিরাপত্তায় আপনি নিরাপদ থাকবেন। আমরা অনির্দিষ্টকালের জন্য বাসা থেকে কোথাও যদি ভ্রমণ বা গমন করে তাহলে এ দোয়া পাঠ করা যায়।
আসলে, কোথাও গমন বা ভ্রমণ করতে গেলে আমাদেরকে প্রথমে পরিবারের সুরক্ষা নিয়ে চিন্তা করতে হয়।
পরিবারের সুরক্ষা নিশ্চিত করার জন্য আল্লাহ তাআলার নিকট দোয়া প্রার্থনা করার জন্য আমরা ফি আমানিল্লাহ পাঠ করে থাকি।
ফি আমানিল্লাহ শব্দের অর্থ আল্লাহর নিরাপত্তায় আপনাকে দিয়ে গেলাম, অর্থাৎ এখন থেকে ইনশাআল্লাহ আল্লাহ তা’আলা আপনার জীবন, ইজ্জত এবং ধন-সম্পদ নিরাপদ রাখবেন। সর্বক্ষেত্রে আল্লাহ তায়ালার কাছ থেকে নিরাপদ এবং সুস্থ কামনা করা আমাদের কাম্য।
ফি আমানিল্লাহ পাঠ করার ফজিলত রয়েছে যেমন বেশি, ঠিক তেমনি এই আয়াতের কাজ হচ্ছে অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। এই আয়াত পাঠ করার মাধ্যমে আমরা পরিবারের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে পারে এবং ব্যবসা-বাণিজ্যে ও অন্যান্য দরকারি কাজে গমন করতে পারি।
তাছাড়াও আমরা হজ কিংবা ইসলামিক যে কোন কাজে ভ্রমণ করলেও ফি আমানিল্লাহ পাঠ করে যাওয়া উচিত।
ফি আমানিল্লাহ পাঠ করার ফজিলত স্বরূপ সর্বপ্রথম আপনার আমার পরিবারের সুরক্ষা নিশ্চিত হয়।
এরপর ফি আমানিল্লাহ পাঠ করায় আল্লাহ তা’আলা আপনার ওপর সন্তুষ্টি হয় এবং পরিবারের সাথে আপনাকে সুরক্ষা প্রদান করে।
আল্লাহ তাআলা আপনার আমার সকল প্রকার পেরেশানি দূর করে এবং ভ্রমণ করার রাস্তা সহজ করে দেয়। তবে হ্যাঁ আপনাকে আমাকে অবশ্যই ভ্রমণ করার সময় জিকির করতে হবে তসবিত তাহলিম করতে হবে।
আপনার আমার বিশ্বাস আল্লাহ তাআলার উপর যত বেশি হবে, আল্লাহ তাআলা আপনাকে আমাকে সুরক্ষার।
ফি আমানিল্লাহ উত্তরে কি বলতে হয়?
যেহেতু ফি আমানিল্লাহ বলতে মূলত আল্লাহ তায়ালার কাছে নিরাপত্তা চাওয়াকে বোঝানো হয়।
আর আমরা সকলেই জানি আল্লাহ তায়ালার নিকট কোন কিছু চাওয়া বলতে প্রার্থনা কে বুঝানো হয়ে থাকে।
আর প্রার্থনা করার সময় কোন ধরনের জবাব দিতে হয় না এটা বলা ভুল। কেননা প্রার্থনা করার সময় আমরা আলহামদুলিল্লাহ বলে থাকি। সুতরাং আপনি ফি আমানিল্লাহ উত্তরে আলহামদুলিল্লাহ বলতে পারেন।
তবে এর কোন স্পষ্ট ব্যাখ্যা পাওয়া যায়নি, তবে যেহেতু আমরা মোনাজাত করার সময় আলহামদুলিল্লাহ বলে থাকি।
তাই আপনি ফি আমানিল্লাহ পাঠ করার পর আলহামদুলিল্লাহ বলতে পারেন, তবে আবারো বলেন এই এরপর কোন স্পষ্ট ব্যাখ্যা নেই।
বেশিরভাগ ক্ষেত্রে চুপ করে থাকাকে বেশি প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে এবং কোন ধরনের দিকনির্দেশনা প্রদান করা হয়নি জবাব দেওয়ার।
ফি আমানিল্লাহ কেন বলা হয়?
অনেকে ক্ষেত্রে আমরা ফি আমানিল্লাহ আয়াত পাঠ করি, তবে অনেকেই আছে যারা এই আয়াত কেন পাঠ করা হয় জানেন না।
আসলে এই আয়াতটি কেন পাঠ করা হয় এর মূল কারণ এর অর্থের মধ্যে লুকিয়ে রয়েছে।
ঠিক একারণেই আমি প্রথমে ফি আমানিল্লাহ শব্দের অর্থ কি তা বুঝিয়ে বলেছি। যেন আপনারা খুব সহজে এ আয়াতটি কেন পাঠ করা হয় বা বলা হয় তা জানতে পারেন। ফি আমানিল্লাহ কেন বলা হয়, চলুন নিচে জেনে নেই:
- অনির্দিষ্টকালের জন্য ভ্রমণের সময় পরিবারের সুরক্ষা নিশ্চিতের ক্ষেত্রে এ আয়াত পাঠ করা হয়।
- রাত্রে ঘুমানোর পূর্বে যান এবং মালের হেফাজত করার জন্য এ আয়াত পাঠ করা হয়।
- পুরো পরিবার মিলে বাসা ফাঁকা করে, গমন করার সময় বাসা বাড়ির সুরক্ষার জন্য এই আয়াত পাঠ করা হয়।
- আল্লাহ তাআলার নিকট সব সময় নিরাপত্তা লাভের উদ্দেশ্যে এই আয়াতটি পাঠ করা হয়।
- যেকোনো ধরনের বড় রোগে আক্রান্ত হলে শাফায়াত লাভের উদ্দেশ্যে এবং নিরাপত্তা লাভের উদ্দেশ্যে এই আয়াত পাঠ করা হয়।
- পরিবারসহ বাড়িতে উপস্থিত গৃহপালিত পশুর সুরক্ষা কামনার জন্য এই আয়াত পাঠ করা হয়।
- মহল্লাবাসীকে আল্লাহ তায়ালা যেন নিরাপদে রাখেন এর জন্য এই দোয়া পাঠ করা হয়।
- যেকোনো ধরনের বিপদ-আপদের সম্মুখীন হলে আল্লাহর নিকট সাহায্য প্রার্থনার জন্য পাঠ করা হয়।
এগুলো হলো কিছু উল্লেখযোগ্য পরিস্থিতি যেগুলোর কারণে আমাদের ফি আমানিল্লাহ আয়াতটি পাঠ করতে হয়। এছাড়াও শুধুমাত্র এতোটুকুই সীমাবদ্ধ নয় আপনি যেকোনো ধরনের বিপদের সম্মুখীন হলে এ আয়াত পাঠ করতে পারেন।
আপনি আমি কথা ভ্রমণে যাচ্ছে, বাসা বাড়িতে সকলকে দেখে ঠিক এই সময় সুরক্ষা কামনার জন্য এই আয়াত পাঠ করে থাকি।
বলতে গেলে যেকোন বিপদ থেকে আল্লাহ তাআলা যেন রক্ষা করেন এ বিষয়ে দোয়া প্রার্থনা করার জন্য এই আয়াত পাঠ করে।
ফি আমানিল্লাহ বলা যাবে কি?
অবশ্যই আপনি আমি ফি আমানিল্লাহ এই আয়াতটি পাঠ করতে পারব, কেননা স্বয়ং নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদেরকে এই আয়াত পাঠ করার দিক নির্দেশনা দিয়েছেন।
একজন সাহাবী গমনের সময় আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ (স.) এর নিকট এসে হাজির হলেন এবং একটি আমল জানতে চাইলেন।
ঠিক এই সময় আমাদের প্রিয় নবী সেই সাহাবীকে ফি আমানিল্লাহ পাঠ করার দিক নির্দেশনা দিয়েছিলেন।
আর এ সময় থেকে বর্তমান পর্যন্ত আমরা অনেক ক্ষেত্রে ফি আমানিল্লাহ আয়াতটি পাঠ করে থাকি।
যেহেতু এই আয়াতের মাধ্যমে আমাদের নিরাপত্তার প্রার্থনা করা হয় এবং প্রার্থনা করা আল্লাহ তাআলা পছন্দ করেন।
তাই ফি আমানিল্লাহ বলা যাবে এবং এতে কোন ধরনের বিদায়াত হবে না। তবে আপনি যদি বিদআত করার মত আয়াতটি উচ্চারণ করেন তাহলে অবশ্যই এটি বিদআতের যোগ্য হবে।
আপনি কোথাও যাচ্ছেন এবং অন্যকে দেখানোর জন্য আপনি এই আয়াতটি তেলাওয়াত করলেন, এক্ষেত্রে আয়াতটি বিদআত বা পাপের সমতুল্য হতে পারে।
কেননা এই আয়াতের প্রার্থনা করার জন্য বলা হয়েছে, কাউকে দেখিয়ে বলার জন্য বলা হয়নি।
তাই সব কিছু চিন্তা-ভাবনা করে কাজ করবেন এবং লোক দেখানোর উদ্দেশ্যে কোন ধরনের আমল করা করবেন না এবং করার চেষ্টাও করবেন না। আপনার আমার কম হলেও চলবে তবে, লোকে দেখানো অত্যাধিক আমল করা উচিত নয়।
উপসংহার
আশা করি প্রিয় পাঠক পাঠিকা গন আপনারা সকলেই, আমাদের এই পোষ্টটি পড়ে অনেক বেশি জ্ঞান অর্জন করতে পেরেছেন।
আমরা সর্বদাই আপনাদের জ্ঞান বৃদ্ধির কাজে নিয়োজিত থাকে এবং নিত্য নতুন পোস্ট লিখে থাকে।
আমরা যা লিখে সব গবেষণা করে লিখে থাকি যেন একটুকু ভুল না হয় এবং আপনারা যেন ভুল না শিখেন। সর্বোপরে একটি কথাই বলবো নিজে সুরক্ষিত থাকুন এবং মহামারী থেকে বাঁচার জন্য এই আমলটি করুন।
এ আমলটি শুধুমাত্র অন্যের নিরাপত্তার জন্য নয় বরং নিজের নিরাপত্তা কামানোর জন্য ব্যবহার করা হয়।
তাই নিজের নিরাপত্তা নিশ্চিত করুন এবং আল্লাহ তাআলার নিকট নিজের গুনাহ মাফ চাওয়ার চেষ্টা করুন।
আল্লাহ তা’আলা নিকট পরিপূর্ণ বিশ্বাস রেখে ফি আমানিল্লাহ পাঠ করার মাধ্যমে আল্লাহ তা’আলা আপনাকে আমাকে অবশ্যই নিরাপত্তা প্রদান করবেন। যেকোনো ধরনের মহামারি এবং আজব গজবের হাত থেকে রক্ষা করবেন। নেয়ামত প্রদান করবেন এবং দুর্দশা দূর করার মাধ্যমে হেফাজত করবেন।
ভাগ্য যেহেতু আল্লাহ তাআলার হাতে তাই ভাগ্য অনুযায়ী আপনার আমার কপালে দুর্ভিক্ষ থাকলে সেটা নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়া উচিত নয়।
কেননা আল্লাহ তায়ালা যেহেতু একদিকে অন্ধকার রেখেছেন ঠিক অন্যদিকে আলো রেখেছেন বান্দার মন পরীক্ষা করার জন্য।
তাই আপনাকে আমাকে আল্লাহ তাআলার পরীক্ষায় পাস করতে হবে এবং যেকোনো ধরনের সমস্যার সমাধান করার চেষ্টা করা সহ আল্লাহ তায়ালার উপর বিশ্বাস রাখতে হবে। আপনার আমার বিশ্বাস পারে আপনাকে আমাকে মুমিন ব্যক্তি হিসেবে গড়ে তুলতে।